তথ্য বিবরণী ॥ ৪ আগস্ট, ২০১৪ ইং তারিখে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় ‘মাদ্রসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত’ শিরোনামে প্রকাশিত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ নয়মৌজা তাহিরপুর ইসলামিয়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আপ্তাব-খোদেজা শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ ট্রাস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এমপি’র বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিবৃতি প্রদান করেছেন। পত্রিকাটির শিরোনামে বলা হয় মাননীয় মন্ত্রী মাদ্রাসা বন্ধ করার হুমকী দিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে মাননীয় সমাজকল্যাণমন্ত্রী আঞ্চলিক ভাষায় বলেন-“হাছারে মিছা মিছারে হাছা (সত্যরে মিথ্যা মিথ্যারে সত্য) ইতা করার লাগি মাদ্রাসা নয়, মাদ্রাসা শিক্ষার সাথে কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া দরকার। মাদ্রাসায় পইড়া ইংরেজীতে রাষ্ট্রপতির নাম লিখতা পারইন না কইতাও পারইন না।”এটা দুঃখজনক।
মাননীয় মন্ত্রী এখানে বুঝিয়েছেন এই মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষার্থীর পরিবারের অভাব মোচন হয়না। দেশের উন্নয়নেও কাজে লাগে না। একজন শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি যদি কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা যায় তাহলে ঐ শিক্ষার্থীর ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি তার পরিবারটিও আর্থিক নিরাপত্তা লাভ করবে।
মন্ত্রী বলেন, এই কথা গুলির সাথে মাদ্রাসা বন্ধ করার কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই মুসলমান। এদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বর্তমান সরকারের মাদ্রাসা বন্ধ করার কোন ইচ্ছাই নাই। বরং মাদ্রাসা শিক্ষাকে কিভাবে আরও যুগপযোগি করা যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে।
মন্ত্রী ইংরেজী শিক্ষা নিয়ে যা বলেন তা হলো বিদেশে শ্রমিকদের শিক্ষিত না করে ইংরেজী না শিখিয়ে পাঠানোর ফলে চাকুরী ক্ষেত্রে তারা নানা ধরনের সমস্যায় পরে। এক্ষেত্রে মাননীয় মন্ত্রী তার বক্তব্যে সকল ক্ষেত্রে ইংরেজী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অন্য এক জায়গায় বলা হয়েছে সমাজকল্যাণমন্ত্রী মাদ্রাসা সুপারদের মাদ্রাসা থেকে বের করে দেবার কথা বলেছেন। মুলত মাননীয় মন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আঞ্চলিক ভাষায় যা বলেছেন তা হলো “মাদ্রাসার লেখা পড়া উন্নত করইন। আর আমি মাদ্রাসা অকল গুলো ভিজিট শুরু করমো। মহতমিম যারা আছইন বাবা হুশিয়ার ওই যাও, ই বছর যদি লেখা পড়া না করাও, তোমরারে ই মাদ্রাসাত থাকতে দিতাম নয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন মাফ নয়”
মাননীয় মন্ত্রীর কথায় ষ্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি একজন অভিভাবক হিসাবে তার দায়িত্বের কথাই যথার্থভাবেই ব্যক্ত করেছেন। যারা পড়ানোর ক্ষেত্রে ফাঁকি দিবে তাদেরকে শাস্তির কথা বলাটা অত্যন্ত যৌক্তিক।
পরিশেষে মন্ত্রী বলেন, “নবীগঞ্জ ইজ মাই ওউন এরিয়া। এই এলাকার চামড়ার সাথে আমরার চামড়ার মাটি মিশে আছে। সুতরাং নবীগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে আমাকে কোন প্রশ্ন করতে হবে না”।
মাননীয় মন্ত্রীর ব্যাপারে বলা হয়েছে তিনি নাকি এতিমদের অধিকার বঞ্চিত করেছেন। এতিম শিশুদের বঞ্চিত করা প্রসঙ্গে মাননীয় মন্ত্রী তার ঐ বক্তব্যে মূলত কোন কথাই বলেননি। তিনি বরং বিভিন্ন এতিমখানায় গমন করে তাদের সাথে দীর্ঘসময় ব্যয় করে এতিম শিশুদের মন প্রফুল্ল রাখতে ভূমিকা রাখেন।
মাননীয় মন্ত্রী তার বক্তব্যের কোথাও মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া বা কোরআনী শিক্ষার বিরুদ্ধে কিছু বলেননি বা ইঙ্গিত প্রদান করেননি। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও যুগপযোগি করার ইঙ্গিত প্রদান করেছেন।
মূলত মাননীয় মন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে একজন ধর্মভীরু ইসলামী মনামানুষ। তিনি সিলেটের বিভিন্ন পবিত্র মাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাজারসমূহ নিয়মিত জিয়ারত করে থাকেন। তার মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ করার অভিযোগটি অনাকাংড়িখত ব্যাপার। মাননীয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন যে তার ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে সকল ধর্মপ্রাণ মুসুল্লী ভাইদের সাথে তার ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘঠবে।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী প্রধান তথ্য অফিসার মোঃ মাইনুল ইসলাম প্রেরিত এক বিবৃরিতে এ তথ্য জানানো হয়।