স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ চৌধুরী বাজার পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ রুকন উদ্দিনের কন্যা ও ঢাকা স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা (২৫) র লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করেছে রমনা থানা পুলিশ। তিনি ওই এলাকার শান্তিবাগে তার মা’য়ের সাথে ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা করে আসছিল।
জানা যায়, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর এলাকার ৬৪/৪ নাম্বার বাসার নিচে এক অজ্ঞাত তরুণীর লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা রমনা থানায় খবর দিলে ওসি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে এ বিষয়ে কোন কিছু জানতে পারেনি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ তাকে ধর্ষণ করার পর ওই ৫তলা ভবনের উপর থেকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করেছে। রমনা থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নাম্বার বাসার আশ পাশে তিনটা বিল্ডিং আছে, তিনটার যেকোনো একটা থেকে পড়ে মারা গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ তাকে ধর্ষণ করার পর হত্যা করেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি তদন্তাধীন। ময়নাতদন্তে পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে আংশিক আলামত পাওয়া গেছে। এদিকে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন থাকাকালিন সময়ে রুম্পা কোন সহপাঠির সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল কি না এ নিয়েও সন্দেহের বাসা বেঁেধছে তার পরিবারের লোকজনের মাঝে। তবে নিহত তরুনীর চাচা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তার পরিবারের কোন ধারণা নেই। হয়ত বা থাকতেও পারে। নিহত রুম্পার চাচা আরও জানান, সে টিউশনি শেষ করে বাসায় এসে টাকা-পয়সা, মোবাইল সব রেখেই বের হয়েছে। পায়ে হিল ছিল সেটাও খুলে স্লিপার সো পরেই বের হয়েছিল বলে শুনেছি।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ জানান, ধর্ষণের পর রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আলামত পাওয়া গেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে নখ ও আঙ্গুলের দাগ রয়েছে। এবং যে ইনজুরি গুলো পেয়েছি সেগুলো দেখে মনে হচ্ছে উঁচু কোনো জায়গা থেকে পড়ে মারা গেছে। তার শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। রুম্পার সহপাঠিরা জানায়, আলখাছ আহমেদ সৈকত নামে এক ছাত্রের সাথে খুব ভাল সস্পর্ক ছিল। হয়তবা সে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম আরও জানান, হত্যাকারী যে-ই-হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। কোন তথ্য পাওয়া মাত্রই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মামলাটি তদন্ত করছেন রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ জহিরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। খুব দ্রুতই এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। কি কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে এখনো তা স্পষ্ট হয়নি। আমরা খুব গুরুত্বের সাথে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আসা করছি দু-এক দিনের মধ্যেই এর রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবো।