Habiganj Express | হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস

হলদারপুরে ইসলাম উদ্দিন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মুকিত মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গ উপজেলার বড়ইউড়ি ইউনিয়নের হলদারপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মুকিত মিয়াকে (৫০) পুলিশ গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃত মুকিত মিয়া কালাইনজুড়া গ্রামের হাজী ওসমান আলীর ছেলে। গতকাল বুধবার বেলা ৩টার দিকে পিবিআই এর পরিদর্শক মোঃ মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে পিপিআই একটি বিশেষ টিম কালাইনজুড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই এর পরিদর্শক মোঃ মাইনুল ইসলাম। পুলিশ সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর হলদারপুর গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক শেখরুল ইসলাম বিদেশে চলে যাওয়া তার কার্ড নিয়ে সরকারী সহযোগিতার চাউল ও নগদ টাকা আনতে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের কাছে যান শেখরুল ইসলামের ভাই সিরাজ মিয়া। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সিরাজ মিয়াকে জানান, যার কার্ড সে এসে চাউল ও টাকা নিতে হবে। জবাবে সিরাজ মিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে অনুরোধ করে বলেন শেখরুল মিয়া বিদেশে চলে গেছেন। তার ভাই হিসেবে তিনি চাউল নিতে এসেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের নির্দেশে গ্রেফতারকৃত মুকিত মিয়াসহ মামলার অন্যান্য আসামীরা সিরাজ মিয়া ও তার আত্মীয় স্বজনের বাড়ি-ঘরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এ সময় সিরাজ মিয়াসহ তার আত্মীয় স্বজনদের বাঁচাতে ইসলাম উদ্দিন এগিয়ে আসলে মুকিত মিয়া ও অন্যান্য আসামীরা তার উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় ইসলাম উদ্দিনসহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক ইসলাম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ইসলাম উদ্দিনের লাশের ময়না তদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ইসলাম উদ্দিনের বড় ভাই নুর উদ্দিন বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে প্রধান ও মুকিত মিয়াকে ২নং আসামী করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে বানিয়াচঙ্গ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হক দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত ২মার্চ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটে মামলার মূল আসামী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, তার ভাই মামলার ৫নং আসামী হাফিজুর রহমান, চাচাত ভাই ২নং আসামী ফারুক মিয়া ও ভাতিজা ৬নং আসামী মিজানুর রহমানের নাম বাদ দেয়া হয়। এপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ৪ আসামীর নাম চার্জশীট থেকে বাদ দেয়ায় মামলার বাদী নুর মিয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আসামী দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ এনে দাখিলকৃত চার্জশীটের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারাজি আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা জাহানের আদালতে মামলাটির নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই পরিদর্শক মোঃ মাইনুল ইসলাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই পরিদর্শক মোঃ মাইনুল ইসলাম জানান, ইসলাম উদ্দিন হত্যা মামলার ২নং আসামী মুকিত মিয়াকে গতকাল গ্রেফতার করেছি। মামলাটি তদন্ত কাজ খুব দ্রুতই চলছে। তদন্ত শেষে শীঘ্রই আদালতে চূড়ান্ত প্রবিবেদন দাখিল করা হবে।