Habiganj Express | হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস

মসজিদের ভেতরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ॥ নবীগঞ্জে দু’পক্ষের দু’দফা সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত

নবীগঞ্জ সংবাদদাতা ॥ একপক্ষ দাবি করছেন নামাজের আগে মিলাদ পড়ানো হোক। অপরপক্ষ দাবি করছেন আগে নামাজ পড়ানো হোক, পরে মিলাদ হবে। এ নিয়ে মসজিদের ভিতরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সংঘর্ষে। এতে আহত হয় অন্তত ২০ জন। এর জের ধরে গতকাল বুধবারও দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার শবে বরাতের রাতে কুর্শি ইউনিয়নের খনকাড়িপাড়া গ্রামে মসজিদের ভেতরে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পবিত্র শবে-বরাত উপলক্ষে খনকাড়িপাড়া গ্রামের সোহান চৌধুরী মসজিদে মিলাদ পড়ানোর জন্য শিরণী নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি নামাজের আগে মিলাদ পড়ার জন্য ঈমাম সাহেবকে অনুরোধ করেন। এতে গ্রামের মুকিত চৌধুরী, সোহেল ও রিপন বাঁধা দেন। তারা জানায় নামাজের পরে মিলাদ হবে। এ সময় অপর পক্ষের লন্ডন প্রবাসী মৃনাল চৌধুরী ও সোহান চৌধুরীর লোকজন নামাজের আগে মিলাদ হবে বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজন মসজিদ থেকে বের হয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হন। বাদ এশা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল বুধবার দুপুরে আবারো দু’পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০জন আহত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ১০জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, আবু বক্কর (৫০), শাহ সোহান (৩০), শেকুল (১৮), ইজাজ মিয়া (৭০), জুনেদ (১০), ইমানুর (২০), আবু ইউসুফ (৫০), রবিউল (২৫), মুহিদ (৪৫), রায়হান চৌধুরী (৩২), রাব্বি চৌধুরী, (১৮), মুহিবুর রহমান (৫২), সাহেল চৌধুরী (৪১), আব্দুল মুকিত (৪৫), মারুফ মিয়া (৫৬), জুয়েল আহমেদ (৩২), জব্বার (৭০), শাকিল (২৫) ও সোহাগ আহমেদ (২৫)। এ ঘটনার পর থেকে গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, ওই দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আধিপত্য বিস্তারের এই বিরোধের জের ধরেই মসজিদে একপক্ষের প্রস্তাব অপরপক্ষ মেনে না নেয়ায় তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামে জনৈক যুবলীগ নেতা ও ছাত্রদল নেতার মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তাদের বিরোধের কারণে গ্রামে মাঝেমধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। ইতোপূর্বে দুটি পক্ষের মধ্যে একাধিকবার দাঙ্গাহাঙ্গামা হয়েছে। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে।