স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবল উপজেলার মিরপুরে সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার মামলায় নব-নির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারা মিয়া ও জেলা পরিষদ সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা আলাউর রহমান শাহেদ এর জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সাথে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপেক্ষিতে ৮ ঘণ্টার রিমান্ড প্রয়োজন আরও তিন দিনের জেল গেইেটে জিজ্ঞাসাবদ করা যাবে বলে আদেশ হয়েছে। গতকাল রবিবার হবিগঞ্জের জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম তৌহিদুর রহমান এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরে আসামীদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনার শুনানী করেন, আদালত পরিদর্শক কামাল আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির ওসি শাহ আলমসহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এবং বেশ কয়েকজন আইনজীবী। তারা আদালতে প্রার্থনা করেন, আসামীরা পুলিশ অ্যাসল্ট, জুয়াসহ বিভিন্ন মামলার আসামী। ঘটনার দিন এমপি কেয়া চৌধুরীকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। এর পিছনে আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের নাম এবং ঘটনাস্থল থেকে মাইকসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করতে আসামীদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
অপরদিকে আসামীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো, অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ ও অ্যাডভোকেট সামছু মিয়া ও অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদসহ ২০/২৫ জন আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধীতা করে আসামীদের জামিন প্রার্থনা করেন।
দীর্ঘ শুনানী শেষে বিজ্ঞ বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে আসামীদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন এবং রিমান্ডের আদেশ পরে দিবেন বলেন। এ সময় আসামী তারা মিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো একটি আবেদনে জানান, আসামী তারা মিয়ার শপথ গ্রহণে বিভাগীয় কমিশনার এর কাছে কারাগারে শপথ অথবা প্যারোলে শপথ এর ব্যবস্থার জন্য করা আবেদন পত্রে স্বাক্ষর প্রদানের ব্যবস্থা জেল সুপারকে নির্দেশের এবং মামলা পরিচালনার জন্য আম মোক্তার নামা প্রদান এর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। এ ব্যাপারেও পরে আদেশ হবে বলে বিচারক জানান। পরে রবিবার রাত ৭টায় বিজ্ঞ বিচারক উপরোক্ত আদেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফয়জুল বশির চৌধুরী সুজন জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে এবং এমপি কেয়া চৌধুরীর উপর হামলার পেছনে আর কারা জড়িত আছে তাদেরকে খুজে বের করতে আসামীদেরকে রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়।
আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো জানান, যে সকল ধারায় মামলাটি হয়েছে তা আসামীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। মামলায় সরকারী কাজে বাধার কথা বলা হলেও সরকারী কোন কর্মকর্তা বাদী হন নি। তাই রিমান্ডের বিরোধীতা করা হয়।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় হবিগঞ্জের একদল ডিবি পুলিশ ঢাকার কদমতলীর একটি বাসা থেকে তারা মিয়া ও শাহেদকে গ্রেফতার করে। পরদিন বুধবার আদালতে হাজির করে আসামীদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি শাহ আলম।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর বিকেলে মিরপুর বেঁদে পল্লীতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে সরকারী সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে এমপি কেয়া চৌধুরীর একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে সমাজসেবা অফিস। উক্ত অনুষ্ঠানে হামলা চালায় তারা মিয়া ও আলাউর রহমান শাহেদের নেতৃত্বে একটি দল। এ সময় এমপি কেয়া চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ও ইউপি সদস্য পারভিন আক্তার বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।