Habiganj Express | হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস

বাহুবল প্রাইমারী স্কুলের সভাপতি পদ নিয়ে সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলার রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি শেষ পর্যন্ত মারামারি পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বৃদ্ধ ও মহিলাসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের মাঝে অন্ততঃ ৪ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সিলেট ও হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সভাপতি প্রার্থী শাহজাহান মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি শাহজাহান মিয়া ও সাবেক প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বর্তমান সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করার অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পুটিজুরী ফরেস্ট অফিসের বিটকর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার আতাউর রহমান সহ কয়েকজন। তদন্ত কার্য চলাকালে উভয়পক্ষ তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়। আহতদের মাঝে গুরুতর অবস্থায় রাজাপুর গ্রামের মোস্তফা আলীর পুত্র শফিক মিয়া (২৫), মৃত শমছুদ্দিনের পুত্র জহুর আলী (৭০) কে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ইছাক আলীর পুত্র মনির (৩৩), মৃত সাজিদ আলীর পুত্র জিতু মিয়া (৫০) কে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে এবং মিটাপুর গ্রামের আব্দুল ছোবানের পুত্র আব্দুল রহিম (৪২), জমশেদ উদ্দিনের পুত্র এলাইছ মিয়া (৩৫), কাইতগাঁও গ্রামের মৃত হাজী মুদ্দত আলীর পুত্র শামছুল ইসলাম (৪০), একই গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিনের পুত্র ইছাক উদ্দিন (৫৫), রাজাপুর গ্রামের জিতু মিয়ার স্ত্রী ছিতারা খাতুন (৩৫), একই গ্রামের মৃত তাহির আলীর পুত্র আব্দুল গফুর (৭০), মৃত সাজিদ আলীর পুত্র রুকু মিয়া (৩৫), একই গ্রামের মিন্নত আলীর পুত্র কুতুব উদ্দিন (৩০)কে বাহুবল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে বাহুবল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ও বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
বাহুবল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নজরুল ও শাহজাহানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজ একটি অভিযোগের তদন্তকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ মোবাইল ফোনে জানান, সাবেক প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের দায়েরকৃত একটি সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তদন্ত চলাকালে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাহুবল মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) কাজী জিয়াউদ্দিন বলেন, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৬ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ছুড়েছে।